একটা প্রশ্ন কি ঘুরে ফিরে আমাদের সবার মনে আসে না? যে খারাপ মানুষের সাথে খারাপ হয়?নাকি ভালো মানুষের সাথে খারাপ হয়? কোনটা ঘটে এই জগত সংসারে? আর যদি ঘটেও তাহলে কেন ঘটে? আগে আমরা খুব সহজেই বলে দিতে পারতাম ও নিশ্চয়ই কোন খারাপ কাজ করেছে, তাই জন্য ওর সাথে খারাপ হয়েছে। আরেকজন মহান কিছু করেছে,তাই সুখ স্বাচ্ছন্দ্য আর রাখার জায়গা পাচ্ছে না। তাহলে এই প্রশ্নটা কি অযাচিত? যে 14 বছরের বনবাস কেন রামচন্দ্রের হয় ?রাবণের হাতে অপহৃত পুতনা বা হিরম্বা না হয়ে কেন লক্ষ্মীস্বরুপা সীতা হন? যীশুখ্রীষ্ট কেই কেন ক্রুষবিদ্ধ হতে হয়? শ্রীকৃষ্ণকে কেন কারাগারে জন্মাতে হয়? বিশ্ব সংসারের নিয়ন্ত্রক,শ্রী কৃষ্ণের মা দেবকী কে কেন দুর্বিষহ কারাগার যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়? প্রল্হাদকে কেন নিজের বাবা হিরণ্য কোশিপুর দ্বারা নিগৃহীত হতে হয়? ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির কে কেন ধর্মের স্বপক্ষে থাকা সত্ত্বেও রাজ্য পাঠ খুইয়ে,মান সম্মান খুইয়ে,ক্রীতদাসের মতো বিতাড়িত হতে হয়? প্রশ্ন জাগে তো? যদি ও এর উত্তর আমাদের জানা,যে ওনারা প্রত্যেকেই নাকি এমন কিছু না কিছু করেছিলেন যার কর্মফল হিসেবেই এইসব ঘটেছে। যার মধ্যে কিছু এই জন্মের কিছু পূর্বজন্ম, কিছু পূর্বপুরুষের দ্বারা কৃতকর্মের ফলস্বরূপ আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের চোখে সেসব কর্মফল স্বরূপ সাজা বা শিক্ষার বিষয়টা কি এইসব মহাপুরুষদের ক্ষেত্রে ততটা গ্রহণযোগ্য বলে হয় বা প্রশ্নহীন বলে মনে হয় ? যখন তুলনামূলকভাবে আমাদের দেখতে হয় পাপ,অন্যায় আর মিথ্যাচারের গদিতে বসে রম রমিয়ে বেড়ে চলা অন্যায়কারীদের পোয়া বারো?তাহলে এর উত্তরটা বা ব্যাখ্যাটা ঠিক কি হওয়া উচিত ? না উত্তরটা আমি বলে দেব না। কারণ প্রত্যেকেই বিচক্ষণ মানুষ,আমার মনে হওয়া উত্তরই যে তাদের যথেষ্ট বলে মনে হবে তার কোন মানে নেই । তাই উত্তরটা যে যার মত করেই খুঁজে নেবেন। তবে এতটুকু অবশ্যই বলব,নিশ্চয়ই আরেকটা পর্ব ও আছে। নাটক বা সিনেমার ইন্টারভেলের মত।তাই ধৈর্য ধরে দ্বিতীয় অধ্যায়ের অপেক্ষা করতেই হবে। তার আগে ময়দান ছাড়লে কিছুতেই চলবে না। কারণ আমার দেওয়া প্রত্যেকটি উদাহরণের ক্ষেত্রেও ছিল দৃষ্টান্তমূলক দ্বিতীয় অধ্যায়। তাই এই ক্ষেত্রেও থাকবে। সব ক্ষেত্রেই থাকবে। তবুও যখন কিছু মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে সমাজে,যেমন সম্প্রতি ঘটা ঘটনা টি,যার নৃশংসতায় কেঁপে উঠেছে আমাদের অন্তরাত্মা। টলে গেছে আমাদের অস্তিত্বের ভীত,আমরা তখন বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছি, এই পাশবিক আচরণের ভয়াবহতায় আতঙ্কিত হয়ে উঠেছি, বুঝতে পারছিনা এই নির্মম বিষয় গুলোকে তাহলে কোন উপলব্ধির সাথে মেলাবো বা আদৌ মেলাতে পারব কিনা? কারণ এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আর তখন তত্ত্ব বা দর্শন বোধ কাজ করে না,তাই যাই ব্যাখ্যা চেতনার গভীর থেকে তুলে এনে খাড়া করি না কেন,সেটা কে ছেলে ভুলানো অলৌকিক,অবাস্তব গল্পের মত বলেই মনে হয়। যা সত্যি সত্যি যেন কোনদিন ঘটবে না। কারণ মুখ মুখোশের খেলায় লোভী,বিশ্বাসঘাতকদের পারদর্শীতা আজ বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের সংজ্ঞাটাকে ই বদলে দিয়েছে। যার ফলে বর্তমান সমাজে কোনটা যে বাড়িয়ে দেওয়া হাত আর কোনটা যে লেলিয়ে দেওয়া ফাঁদ সেটা ই বোঝা কঠিন হয়ে পড়েছে । তবুও মহাকালের হাত তো শক্ত করে ধরে থাকতেই হবে,কারণ তাহলেই আমরা শক্তি পাবো,অন্যায়ের দাঁত,মুখ ভেঙ্গে দিয়ে অন্যায়কারী কে যোগ্য শাস্তি দিতে,অন্যায়ের শেকড় উপড়ে ফেলে দিয়ে সমাজকে অপরাধ মুক্ত করতে । যদিও অনেক কিছুর মতোই এই প্রয়াসও ছেলের হাতের মোয়া নয়, কারণ ব্যভিচার ঘুনপোকার মত সমাজের আপাদমস্তক ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু হার মেনে নিলে চলবে না।কোন মূল্যেই চলবে না।