‘আমি”
কলমে সোনালী
বয়েই গেল,আজ তোমার চোখে,
আমি কেমন,আমি যেমন,আমি তেমন।
যদি বলো,আমি সাগর বুকের
অবাধ্য ঢেউ,
তুমি একটা শান্ত নদী চেয়েছিলে,
যার বুকে কোনদিন কোন ঝড় উঠবে না,
তাহলে আমি বলব,পরের জন্মেও
আমি বেপরোয়া সাগর হয়েই জন্মাব,
যার বুকে মাথা রেখে,হয়তো কোনদিন,
কোন এক প্রত্নতাত্ত্বিক,আবিষ্কার করবে,
অজানা কোন সভ্যতার ইতিহাস।
যদি বলো,আমি গভীর অরণ্যের বুকে,
বেনামী,কোন এক ফুল,তুমি অর্কিড
চেয়েছিলে,আমি বলব,পরের জন্মেও,
আমি গভীর অরণ্যের বুকে,বুনো জংলি
ফুল হয়েই জন্মাব,
আর চাঁদনী রাতে,সারা শরীর জুড়ে,
সোঁদা মাটির গন্ধ মেখেে,আদিমতার
স্বাধ কুড়াবো।
যদি বলো,আমি তোমার এই গোছানো
তুমিটাকে,এলোমেলো করে দেওয়া,
ছন্নছাড়া,বাউন্ডুলে বৃষ্টি,তুমি পরিপাটি
একটা আলোঝলমলে দিন চেয়েছিলে,
আমি বলব,পরের জন্মেও আমি,
ছন্নছাড়া বৃষ্টি হয়েই জন্মাব
আর আকাশের বুকে জমে থাকা
কালো মেঘের কাজল পড়ে,
মৌন পাহাড়ের গা চুঁইয়ে, চুঁইয়ে
ঝরে পড়বো।
তোমার অভিযোগ আর দোষারোপের,
ধার ধারি না আমি,কারণ আমি জানি,
নদীর বুকে দামাল সাঁতার শেষে,
অজুহাত খুঁজে তীরে ফিরে যায়
সাবধানী নৌকো,
নোতুন বন্দরের তল্লাশে জীবনটাকে
আরো একটু সাজিয়ে গুছিয়ে
নেবে বলে।
কিন্তু তবুও দিনের শেষে,চৌকাঠের
বাইরে ঝুলতে থাকা,তোমার
টুপি,দস্তানা আর মুখোশটা,
সর্ব শরীরে অজস্র উত্তরহীন জিজ্ঞাসার
ছাপ নিয়ে, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে
থাকে দূরের দ্বীপটার দিকে
যার আড়ালে,অস্পষ্টতার চাদর
মুড়ি দিয়ে একইভাবে
তীর-তীর করে প্রবাহিত হয় নদী।