“জীবন চক্র”
কলমে সোনালী
বেড়িয়েছি সেই সাত সকালে,
বৃষ্টি মাথায় করে,পরে রামধনু আঁকা
ঘরোয়া শাড়ি,আটপৌরে চালে।
পেছনে ফেলে প্যাঁচানো সিঁড়ি,
সিড়ির পাশে ঘর,ঘরের মেঝেয়
কাঁটালো লতা,তপ্ত বালুচর।
শোওয়ার ঘরে একলা বিকেল,
ক্লান্ত গ্রিলের জাল,টাঙ্গাইল শাড়ি,
ঢাকাই বুটি,চওড়া জরি পাড়।
ছাদের মাচায় লতানো পুঁই,
গৃহপালিত সুখ,ঘড়ির কাঁটায়
মৎস্য শিকার,ধুতরা ফুলে ধূপ।
গেরুয়া রঙের তুলসী মঞ্চ,
শোকেসে সোনালী ফ্রেমে কবি,
পৌষ মেলার মাটির গয়না
ঝাপসা কয়েক ছবি।বেরিয়েছি সেই
সাত সকালে,তুফান মাথায় করে,
রেখে শিউলি ছাপ বর্ষাতিটা,
ভুলেই ঘরের কোণে।পেছনে রেখে,
বউ কথা কও,শিশির ঘাসে নূপুর,
পদ্ম চোখের ভিজে পাতায়,
মন কেমনের দুপুর।
বৃষ্টির ছাট, নীরব স্টেশন,
নিভু নিভু আলো,বেনামী কত
ক্ষণিক স্বপ্ন,মুখোশ সাদাকালো।
কালশিটে পড়া চায়ের কেটলি,
কুন্ডলী পাক ধোঁয়া,ঝিমুনির ঘোর,
চমকে ওঠা,ধাতব শব্দ ছোঁয়া।
শ্যাওলা পড়া সদর দরজা,
মোটা লেজের ফুলি,কার্নিশ খাঁজে,
ঝুলতে থাকা, আকাশ খসা ঘুড়ি।
শালুক ফুল আর কচুরিপানা,
পানকৌড়ির ডুব,একলা উদয়,
একলা অস্ত অপেক্ষা এক বুক।
চিলে কোঠায় বস্তা পোরা,
কাগজ নৌকা ম্লান,টুকরো টুকরো
ভাঙা স্বপ্ন,বিবর্ণ অভিমান।
সন্ধের বুক চিরে রোজ,রাত্রির
উঁকি মারা,করুন দরদী বেহালার সুর,
দরজায় কড়া নাড়া।
কাশের বনে ঢাকের কাঠি,
মেঘ রৌদ্রের খেলা,তাসের ঘরে
নোনা মাটি, প্রহসনের মেলা।
বেরিয়েছি সব থরে থরে,জীবন ঘরে,
রেখে,কালের নদী পেরিয়ে এপার,
এসেছি ওপার থেকে।
চক্রে চক্রে চক্রাকারে আবার,
ফিরবো আমি,নতুন রূপে নতুন বেশে
জানেন অন্তর্যামী।