“বিবাহ এখন সাইলকের ব্যবসা!!”
অনেককে বলতে শুনি,সাকার ছেলের সাথে বেকার মেয়ের বিয়ে কেন দেবেন?
তাই বিয়ের সময় বা প্রথমেই ছেলের মায়েদের মেয়ের মায়েদের গিয়ে সরাসরি জিজ্ঞেস করা উচিত আপনার মেয়ে সংসারে কত ভাগ টাকা দেবে? বেশ ভালো কথা।
তাহলে মেয়ের মায়েরা বা মেয়েরাও ছেলেদেরকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করবে তো যে সংসারে আপনার বাবা-মা বা অন্য কোন আত্মীয় পরিজন থাকলে তারা সংসারে কে কতটা কান্ট্রিবিউট করবেন? আপনার বাবা-মার পেনশন আছে কিনা? থাকলে কত পান তারা? আপনার বাবা মা র মেডিক্লেম আছে কিনা? কারণ কে বলতে পারে পরবর্তীকালে ঘোড়া রোগ হলে হয়তো ছেলের বউটিকেই খোঁড়া করে দেওয়ার চেষ্টা চলবে। আপনার বাবা-মার দ্বারা আমাদের প্রথম সন্তান হওয়ার ক্ষেত্রে ডেলিভারি চার্জের কতটা পার্ট দেওয়া হবে? মেয়ের বাড়ি থেকে তো আর তার ভাই বোন এসে তার শ্বশুরবাড়িতে পা দুলিয়ে অন্ন ধ্বংস করবেন না। তাহলে আপনার বোন বা দিদি, এদের মধ্যে কতজন বছরে,মাসে বা সপ্তাহে একক বা স্বপরিবারে এ বাড়িতে বাড়তি খরচের কারণ হবেন? বছরে কতবার কোথায় বেড়াতে যাওয়া হবে? এক বছর না পাঁচ বছর না দশ বছর অন্তর সে সমস্ত কিছুও তাহলে ক্লিয়ার করে নেওয়া উচিত।
জামাইষষ্ঠীতে আপনি খালি হাতে যাবেন নাকি আপনার রোজগার বা যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যূনতম একটা উপহার মেয়ের মায়ের জন্য নিয়ে যাবেন সেটাও পরিষ্কার করে জেনে নেওয়া উচিত,মেয়ের বাড়ির তরফের কোন আত্মীয়ের বিয়ে হলে বা অন্য কোন অনুষ্ঠান জনিত কারণে উপহার দিতে হলে আপনি কি হাত গুটিয়ে থাকবেন সুবোধ বালক সেজে? মেয়ের মা নিজের ক্ষমতায় তা কিনে আপনার হাতে ঠুসে দেবে!! আর আপনি সেটা দুকান কাটা নির্বিকার লোকের মত নিয়ে অনুষ্ঠান রক্ষা করে আসবেন গাম্ভীর্যের বর্ম পড়ে?? নাকি নিজের রুচি এবং যোগ্যতা অনুযায়ী নিজের আত্মসম্মানের কথা ভেবে সেখানে কিছু কনট্রিবিউট করবেন? এইসব বিষয়গুলো ও তাহলে বন পেপারে সই করে নেওয়াটা উচিত বলে মনে করছেন অনেকেই বিয়ের আগে! তাইতো?? কারণ এই সব কিছুই কিন্তু প্রাত্যহিক জীবনে নির্মম সত্যের মতো সামনে আসে। যা আকাশ ভরা সূর্য তারা বা কে তুমি নন্দিনী গান গেয়ে। হালকা চালে দেখে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। কি আশ্চর্য না। এ যেন সাইলকের চুলচেড়া হিসেবের ব্যবসা।আর এইসব ভেবেও আমরা এখনো বলে চলেছি বিয়ে নাকি আমাদের সমাজের এক মহান প্রতিষ্ঠান, প্রাচীন প্রতিষ্ঠান,সাত জন্মের বন্ধন।
আমার তো মনে হয় এটা একেবারেই আর সঠিক নয়।
তাই একমাত্র বৈবাহিক সম্পর্কেই ডিভোর্স হয় বিচ্ছেদ হয়। সন্তানের সাথে বাবা-মায়ের সেটা হয় না। ভাই বোনের সাথে দাদা দিদির সেটা হয় না।
আমরা এই সম্পর্কটাকেই উটকো বলে মনে করি, তাই চালের হিসেব ভাতের হিসেব করি। আর সেই কারণেই আমাদের আজকে এইসব কথা বলার জন্য ঝুটি নাড়া দাদা আর ঝুটিকাটা দিদিদের প্রয়োজন পড়ছে।
ছেলেমেয়ে র খরচ নিয়ে বাবা-মায়ের হিসেবজনিত ব্যবসা হয় না। আবার আদর্শ ছেলে মেয়ের ক্ষেত্রেও বাবা-মায়ের বেলাতেও সেটা হওয়ার কথা নয়। তাহলে স্বামীর ক্ষেত্রে স্ত্রী এর ব্যাপারে একমাত্র যখন এটা হচ্ছে,বা স্ত্রীয়ের ক্ষেত্রে স্বামীর ব্যাপারে এটা হচ্ছে তার মানে খোলাখুলি বিবাহ নামক বিষয়টাকে আমরা দাঁড়িপাল্লায় মাপা একটা খোট্টাদের ব্যবসায় নামিয়ে ফেলেছি এটা মানতেই হবে।
যখন কোনো স্ত্রীকে চাকরিহীন বা রোজগারহীন এই মানদন্ডে মেপে তার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যাবতীয় দায় দায়িত্ব, কাজকর্মকে অবমূল্যায়ন করার স্পর্ধা দেখিয়ে,তার সক্ষম স্বামীর ঘরে খাওয়া কে বসে খাওয়ার লাঞ্ছনায় জর্জরিত করা যায়,তাহলে স্বামীর মা ও সক্ষম হলে তারও নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী রোজগার করা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। কারণ কোন একটি সম্পর্ককে যদি রোজগার করা আর না করা দিয়ে ধ্বংস করা যেতে পারে, তাহলে অন্য সকল সম্পর্ক কেই সেই একই আওতার অধীনে আনা উচিত।
বিয়ের আগে এটাও জেনে নেওয়া উচিত সঞ্চয়হীন,মুরদ হীন কোন ছেলের মা নিজের বাপের বাড়ির লোকজনকে ঢেলে আপ্যায়ন করার জন্য ঠিক বছরে কত পরিমান অর্থের অপচয় বা বিনাশ করেন বা করবেন। কারণ এর ওপরেও নির্ভর করবে,ছেলের বউয়ের কাছা ধরে তার টান দেওয়ার নোংরামো।
অনেক মেয়েই যেমন আছেন কেড়ে নিতে জানেন। তেমন অনেকে এখনো আছেন যারা কতটা ছেড়ে দিয়েছেন তার হিসেবটাও জানেন না, তবুও সমালোচনার লক্ষ্য বিন্দু হয়ে আছেন।
তাই……
যারই প্রমাণ নেই তাই ঘটেনি এ দিয়ে আর কতদিন চিড়ে ভিজবে!! বছরের পর বছর ধরে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়াও ডোমেস্টিক ভায়োলেশন এর মধ্যেই পড়ে। আলো,জল,হাওয়া খাওয়া দিচ্ছেন বলে একজন সম্ভ্রান্ত বাড়ির মেয়ে, যে আপনার স্ত্রী তার নাকের ডগা দিয়ে সমস্ত টাকা কড়ি এবং সেই সংক্রান্ত অর্থনৈতিক অধিকার নিজের আর নিজের মায়ের জেম্মায় রাখবেন বছরের পর বছর ধরে!!কেন উনি কি কাজের মাসি?? স্ত্রীকে রোজগার করে নিয়ে আসতে হবে, সেতো বুঝলাম না হলে শিক্ষিত হয়ে লাভ কি কেনই বা আত্মসম্মান থাকা মহিলারা অন্যের পয়সায় খাবেন এসব কিছুর যুক্তি মানলাম! কিন্তু আপনারাও তো অনেকেই এখনো পর্যন্ত মেয়েদের থেকে থাকা শোয়ার জন্য খাট,আলমারি,ড্রেসিং টেবিল,ফ্রিজ মাইক্রোওভেন,লেপ কম্বল মশারি বালিশপত্র,কাঁসার বাসন,লাও পালার ডিনার সেট, তিন চারটে ইন্ডাকশন,৭০/ ৮০টা বেনারসি প্যালেস থেকে কেনা উচ্চ দামের প্রনামি শাড়ি, প্রথম সন্তান বাপের বাড়িতে হয় এই অজুহাতে অ্যাপোলো গ্লিনিগাল্স হসপিটাল বা উডল্যান্ডস এর কেবিন খরচা,ডেলিভারি খরচা, আয়া খরচা,এমনকি ন্যান নামক উচ্চ প্রোডাক্টের দুধের টিনের খরচা পর্যন্ত দুহাত পেতে নেন সেই বেলায় আপনাদের পুরুষ স্বাধীনতায় ধাক্কা লাগে না? পুরুষ সমর্থন কর্মীরা এ ব্যাপারে কি বলবেন?? সন্তানের অন্নপ্রাশন করার সময় ও পর্যন্ত নির্লজ্জের মত সন্তানের মায়ের বাপের বাড়ির আত্মীয়-স্বজনের প্লেটের খরচা এমনকি নিজের সন্তানের মায়ের মানে, আপনার স্ত্রীর প্লেটের খরচাটাও যখন তার বাপের বাড়ির মানুষজনের কাছ থেকে থেকে দুহাত পেতে নেন তখনই আপনাদের তৈরি থাকার কথা সুদ সমে ত পাঁচ আঙুলের থাপ্পড় আপনাদের গালে পড়বে। অথচ তারপরেও আশা করেন আপনাদের স্ত্রীরা আপনাদের আমরণ বিলিয়ে যাবেন সমাজ তাদেরকে গুড গার্ল এর সার্টিফিকেট দেবেন বলে মাই ফুট।আপনাদের বোন মাদুর পেতে কোথা থেকে কিছু টাকা রোজগার করে আনেন বলে,বছরের পর বছর ধরে বাপের বাড়িতে অধিকার আছে এই ছেঁদো অজুহাত দেখিয়ে আপনাদের রোজগারে বসে পা দুলিয়ে খেয়ে যাবেন সে কথা বিয়ের সময় বলে নিয়েছিলেন কি আপনারা??এক্ষেত্রে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য হয়তো দু একটি বাটুল দ্যা গ্রেটকে খাড়া করে হিজরের নাচন নাচিয়ে,কল টু প্রুফের তামাশা দেখাবেন ঠিকই,কিন্তু তাতেও সত্যিটা বদলাবে কি!!