“মুখস্ত বিদ্যা নয় আত্মস্থ বিদ্যাই প্রকৃত জ্ঞান”

ভাবনায় সোনালী

 কিছু কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকার উদ্দেশ্যে অবশ্যই বলব আপনারা এবার সচেতন হন। যারা চালের বস্তা থেকে লালচে হয়ে যাওয়া কিছু মান্ধাতা আমলের নোটস বের করে এনে পিটিয়ে পিটিয়ে,শিলনোড়ায় বেঁটে,ছেঁচকি বানিয়ে,পুরিয়া করে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জোর করে গিলিয়ে,খাইয়ে তাদের সৃজনশীল মানসিকতাকে,কল্পনার জগতকে,নিজেদের মত ভাবনাচিন্তা করার ব্যতিক্রমী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে,যুক্তি মনষ্ক তাকে,প্রতিনিয়ত ধ্বংস করে দিচ্ছেন,বিনষ্ট করে দিচ্ছেন অযৌক্তিক কিছু মুখস্ত বিদ্যার জোর জবরদস্তি আরোপ করে,শুধুমাত্র নিজেদের মুনাফা লাভের লোভে। আপনারা ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগী হয়ে উঠুন দয়া করে। তাদের পঙ্গু বানিয়ে দিয়ে,অহেতুক তাদেরকে পর নির্ভরশীল বানিয়ে তুলবেন না এতে তাদের ক্ষতি হচ্ছে। যথার্থভাবে ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠতে পারছে না। তারা যদি নিজেদের মতো করে ভাবে ভাবুক না,বোঝে বুঝুক না,অন্তত সাহিত্যের ক্ষেত্রে তো যে কোন কবিতা,গল্প বা উপন্যাসের অনেকগুলো ডাইমেনশন থাকে।তাই আপনি বা আমি কোন কিছুর যে ব্যাখ্যা জেনেছি বা বুঝেছি সেটাই ওদেরকে ও পিটিয়ে পিটিয়ে বোঝাতে হবে তার তো কোনো মানে নেই। হতেই তো পারে যে ওরা আপনার আর আমার অতি পরিচিত কোন কবিতা বা গল্পের অন্য কোন এক দুর্লভ দিক খুঁজে পেল,আলোকপাত করল এমন কোন ব্যতিক্রমী ভাবনার ওপর যা আমরা আশাই করি নি। তাই rigidity নয়, নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বা acceptancey র জায়গাটাকে বিস্তৃত করুন দয়া করে। ইগোর বশবর্তী হয়ে বিনা কারণে ভাববেন না যে এটা কোনো ছাত্র-ছাত্রীর আপনাদের প্রতি আনুগত্যের অভাব। ব্যাচ কে ব্যাচ সবাইকেই যে বছরের পর বছর ধরে একই নোটস মুখস্ত করে যেতে হবে আর সেটাই পরীক্ষার খাতায় উগলে দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তাদের স্বাধীনতা রয়েছে বিষয়বস্তু টাকে ভালোমতো বুঝে নিয়ে নিজেদের মতো করে লেখার। নিজেদের মতো করে বিষয়টাকে আত্মস্থ করে যুক্তি সঙ্গত ভাবে সেটাকে উপস্থাপিত করতে পারলেই হলো। তাই প্রথমেই তাদের চিন্তাশক্তির ডানা কে ছেঁটে না দিয়ে বরং তাদের উড়তে দিন। হলোই না হয় প্রথম প্রথম অপরিপক্ক ডানায় ওরা বা পক্ষ সঞ্চালন তাতে ক্ষতি কি বরং এই পদ্ধতিতেই তারা ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে এবং একদিন ঠিকঠাক উড়তেও শিখে যাবে। আর সেই ওড়াতে ই আমাদের সকলের সার্থকতা।

গুরু শিষ্যের সম্পর্ক পৃথিবীর এক দুর্লভ তম সম্পর্ক । সেটার মূল্যকে কোনভাবেই ক্ষুন্ন হতে দেবেন না। এখানে কিছু সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকার  উদ্দেশ্যে ই এই কথাগুলো বললাম। এর বাইরে ও অনেক অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন যাঁদের অনুপ্রেরণায় প্রতিনিয়ত শত সহস্র ছাত্র-ছাত্রী তাদের সব রকমের প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাঁদের উদ্দেশ্যে জানালাম ভালবাসা আর শ্রদ্ধা।