মেয়ের মায়েরা নাকি বিবাহ বিচ্ছেদের নাম করে ব্যবসা করেন !!(কয়েকজন ব্যতিক্রমী অবশ্যই আছে। সবাই নয়, তাই কথাটা বলার সময় বিশেষভাবে নজর রাখুন)… যুক্তিতে সোনালী
অনেক মহিলা আছেন যারা তাদের সক্ষম, বিবাহিত মেয়েদের ৩০ বছর ৪০ বছর ধরে বাপের বাড়িতে ফেলে রেখে নানান অজুহাতে থাকা খাওয়ার অনন্ত ব্যবস্থা করে দেন, খবর নিলে জানা যায় কিন্তু সেইসব চাকুরীরতা মেয়েদের একটা পয়সাও বাপের বাড়ির সংসারে আসে না কোনদিনও। অথচ তারা আজীবন বাপের বাড়ির ঘাড়ে আর মাথায় বসে পা দুলিয়ে জীবন কাটিয়ে দেন।। আর ছেলের বউদের ক্ষেত্রে বিয়ের দ্বিতীয় দিন থেকেই সেই সব মহিলারা সংসারের সাশ্রয়ের দোহাই দিয়ে,ছেলের জন্য অতিরিক্ত দরদের দোহাই দিয়ে পুত্র বধূদের বসে খাওয়ার খোঁটা দিতে দিতে কোন ঠাসা করে দিয়ে অতিষ্ঠ করে ব্যতিব্যস্ত করে মারেন। তারা যে ঠিক কি কি ধরনের অসভ্যতামি করেন সেটা অনেকেরই ভাবনা বা কল্পনার ও বাইরে। আর তারপরেও দু একজন সমাজ সংস্কারক কে বলতে শুনি,মেয়ের মায়েরা নাকি মেয়েদেরকে বিয়ে দেন ডিভোর্সের নাম করে প্রচুর অংকের মুনাফা লুটবেন বলে।আশ্চর্য হয়ে যাই!এই ধরনের মন্তব্য কনফিডেন্সের সাথে ফটর ফটর করে বলতে শুনে। হতে পারে তাদের বিয়ে নিয়ে হয়তো তাদের মা কাকিমারা এই ধরনেরই ব্যবসা করেছেন। যার যেমন অভিজ্ঞতা আর কি ।ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও আজকাল অনেক লোককে সমাজের স্ট্যাটিসটিক্যাল রিপোর্ট বলে স্মার্টনেসের সাথে চালিয়ে দিতে দেখি।কে আর কোন স্ট্যাটিস্টিকসের রিপোর্ট খুলে দেখতে যাচ্ছে আমাদের এই অভয়াদের সমাজে।। মেয়ের মা রা মেয়েদেরকে জন্ম দেন, যন্ত্রণাটা নিশ্চয়ই কোনো শর্টকাট প্রসেস নয়,ছেলেদের মায়ের তুলনায়। তারপর ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে তারা সন্তানদেরকে বুকে আঁকড়ে ধরে বড় করেন। তাদেরকে লেখাপড়া শেখান। অতিরিক্ত কোন গুণাবলী থাকলে বা সেদিকে আগ্রহ থাকলে তাদেরকে গান শেখান। আঁকা শেখাতে নিয়ে যান, প্রাইভেট কোচিং সেন্টারে দেওয়া নেওয়া করেন,তাদের অসুখ বিসুখ ভালো-মন্দ সব টার সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকেন,তাদের রেজাল্ট, আশা আকাঙ্ক্ষা সব কিছুর সাথে, ঠিক যেমন ছেলের মা রা থাকেন। সন্তান তো সন্তানই হয়। সেখানে কি লিঙ্গ ভেদ বলে কিছু হতে পারে? পারে না তো। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে যে কিভাবে কিছু সমাজ কর্মী বা মানুষ এই ধরনের কথা ও বলতে পারেন বহাল তবিয়াতে? তাদেরকে আমার একটাই প্রশ্ন,মেয়ের মা রা মেয়েদের ডিভোর্স নিয়ে ব্যবসা ব্যবসা খেলা খেলেন বলে আপনারা আরোপ দিচ্ছেন বা অভিযোগ করেন সেক্ষেত্রে একটা কথার উত্তর দিন তো,যে ছেলেপক্ষ ৫০ লাখ, ৬০ লাখ,এক কোটি টাকা খোরপোষ দিতে সক্ষম হন কোর্টের অর্ডারে,তারা কি খুব অভাবী বাড়ির, হা ঘরের, অশিক্ষিত মেয়েদের বিয়ে করে আনেন বাড়ির বউ করে? মানে এইসব মেয়ের মায়েরা ডিগ্রি,শিক্ষা, প্রতিপত্তি,সম্পত্তি, সমাজে প্রতিষ্ঠা কিছুই দেখেননি বলছেন? নিজের বা তার বাপের বাড়ির বা তার স্বামীর দৌলতে! এটা কি করে সম্ভব? যাদের নুন আনতে পান্তা ফোরায়,তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কিছুটা হলেও হতে পারে,বিবাহ বিচ্ছেদের সময় অনেক কিছুর পরিপ্রেক্ষিতেই, যেমন মহিলার নিজস্ব চাকরি করা না করা,সন্তানের পরিস্থিতি, অবস্থা সবকিছু বিচার করেই বিচারক এই রায় দেন। মেয়ের মায়েরা আবদার করলেই বিচারককে তাদের আবদার পূরণ করতে হবে,সংবিধানে এমন কোন সেকশন আছে বলে আমার জানা নেই।আবদার তো অনেকেই অনেক কিছুই করেন। সব আবদারই পূরণ হয় নাকি? সেই আবদারই পূরণ হয়,যা বিচারকের চোখে সঠিক ও সঙ্গত বলে মনে হয়। কারণ ছেলে পক্ষ আর তাদের তাঁবড় তাবড় উকিল মেয়ে পক্ষ এবং মেয়েদের এই দাবিকে মিথ্যে,ভুল,ধান্দাবাজি প্রমাণ করার জন্য নিশ্চয়ই কমকরসৎ করেন না গল্পের গরু গাছে তুলে দেন মিথ্যে জাল বিষয়কে নানান ভাবে কাজে লাগিয়ে সবকিছুকে ওলট-পালট করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে এই লিটিগেশনের বিষয়টা চলে ও বছর বছর ধরে। তাই আজকে মেয়ের মা আবদার করলো আর কালকে জাজ তা দিয়ে দিল এটা এত সহজ, টুকটাক বিষয় নয়।আর সেটা অনেক ক্ষেত্রেই আলাদা বিষয়। মানছি সব কিছুরই অপব্যবহারও হয়,একথাও ঠিক। কিন্তু তার মানে এই নয় সেটাকে জেনারালাইজ করে দিয়ে বলে দেওয়া যায়,মেয়ের মায়েরা নাকি মেয়েদেরকে বিয়েই দেন কিছুদিন পরে ডিভোর্সের নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতাবেন বলে,সেটা রীতিমতো অবজেকশনাবল। কারণ সমাজে উচ্চ প্রতিষ্ঠিত কোন ছেলে আর তার বাবা-মা নিশ্চয়ই বড় বড় চাকরিতে প্রতিষ্ঠিত কোন পরিবারের ,তাদের সমান স্ট্যাটাসের,উচ্চ শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত পরিবারের কোন উচ্চশিক্ষিত মেয়েকেই নির্বাচন করেন তাদের ছেলের বউ হিসেবে।তাহলে এরকম বাড়ির একজন মা বাবাও নিশ্চয়ই তাদের তরফ থেকে নমঃ নম করে মেয়ের বিয়ে সারেন না। সামর্থ্য অনুসারে বিপুল খরচা করেন ।টাকা-পয়সা গয়নাগাটি,আতিথেয়তা সবটাই করেন। তাহলে সেই মা দের পক্ষে মেয়ের ঘর ভাঙ্গা মাথায় তুলে অকারনে,ছেলের বাড়ি থেকে ডিভোর্সের নামে টাকা হাতানোর ব্যবসায় নাম লেখানো কিভাবে সম্ভব? সত্যিই আমার মাথায় ঢোকে না। সবার কেস হিস্ট্রি ও সমান হয় না।বিষয়টা তাই ঠিক কোন দিক থেকে জাস্টিফাইড একটু বুঝিয়ে বলবেন দয়া করে। অমুক দিদি জিন্দাবাদ,তমুক দাদা মুর্দাবাদ এই স্লোগান গুলোর উপরেও কিন্তু অনেকগুলো কাউন্টার পার্ট আছে। সেগুলোর জন্য তৈরি থাকা দরকার।